ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে যেমন নিয়মিত ভিত্তিতে মাসিক যাবতীয় তথ্যসংবলিত প্রতিবেদন নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পাঠাতে হয়, তেমনি এখন থেকে একই জাতীয় তথ্য পাঠাতে হবে সাধারণ বিমা কোম্পানিগুলোকেও। তবে বিমা কোম্পানিগুলোকে প্রতিবেদন পাঠাতে হবে এই খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কাছে।
দেশের পুনর্বিমা দায় বহনকারী একমাত্র রাষ্ট্রীয় সংস্থা সাধারণ বিমা করপোরেশন (এসবিসি) ও বেসরকারি খাতের ৪৩টি সাধারণ বিমা কোম্পানির উদ্দেশ্যে গতকাল বুধবার এ ব্যাপারে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইডিআরএ।
যোগাযোগ করলে আইডিআরএর চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, বিমা খাতে অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার স্বার্থেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে নিয়মিত ভিত্তিতে তাদের যাবতীয় তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাতে হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আইডিআরএর সদস্য নবগোপাল বণিক স্বাক্ষরিত এই প্রজ্ঞাপনে কোম্পানিগুলোকে গত মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত চার মাসের যাবতীয় ব্যাংক হিসাবের তথ্য আগামী ৯ অক্টোবরের মধ্যে আইডিআরএর কাছে পাঠানোর কথা বলা হয়েছে।
আর সেপ্টেম্বর থেকে এই তথ্য পাঠাতে হবে নিয়মিত মাসিক ভিত্তিতে। অর্থাৎ এক মাসের প্রতিবেদন পাঠাতে হবে পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে। সে হিসেবে, চলতি সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদন ১৫ অক্টোবরের মধ্যে আইডিআরের কাছে পাঠাতে হবে।
এতে বলা হয়েছে, কোম্পানির নামে যেসব ব্যাংক হিসাব রয়েছে সেগুলো এবং সরাসরি কোম্পানির নামে নয় কিন্তু কোম্পানির ব্যবসার সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যাংকের এমন হিসাবের তথ্যও আইডিআরএর কাছে পাঠাতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, নতুন কোনো ব্যাংক হিসাব খোলা বা কোনো ব্যাংক হিসাব বন্ধ হওয়ার পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তা জানাতে হবে আইডিআরএকে।
কোনো তথ্য গোপন করলে বা ভুল তথ্য পাঠালে বিদ্যমান বিমা আইন ও বিমা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ আইনের ধারা অনুযায়ী লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে জরিমানাসহ অন্যান্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনের সঙ্গে তথ্য পাঠানোর তিনটি নির্দিষ্ট ছকও তৈরি করে দিয়েছে আইডিআরএ এবং এ ছক অনুসরণ করার কথা কেম্পানিগুলোকে বলা হয়েছে। একটি ছক প্রধান কার্যালয়ের জন্য, বাকি দুটি প্রিন্সিপাল শাখা ও অন্যান্য শাখার জন্য।
প্রধান কার্যালয়ের ক্ষেত্রে কোম্পানির নাম, কোম্পানির প্রধান ও নিবন্ধিত কার্যালয়ের ঠিকানা, ব্যবসা শুরুর সময়, মোট শাখা, বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব খোলা বা বন্ধের তারিখ ইত্যাদি উল্লেখ করতে হবে। প্রিন্সিপাল ও শাখাগুলোর ক্ষেত্রে অগ্নি, নৌ, মোটর, বিবিধ বিমার আলাদা আলাদা বিবরণ দিতে হবে।
আইডিআরএ সূত্র জানায়, বেশির ভাগ সাধারণ বিমা কোম্পানি দীর্ঘ বছর ধরে যাচ্ছেতাইভাবে চলে আসছিল। ফলে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এ খাতটিতে কিছুটা ভাবমূর্তি সংকট তৈরি হয়েছে। এ সংকট দূর করতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা দরকার। তা ফিরিয়ে আনতেই এসব তথ্য চাওয়ার এ প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়েছে।
নিটল ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান মাতলুব আহমাদ প্রথম আলোকে বলেন, বিমা খাতে বলা যায় অরাজকতা চলছে। একসময় ব্যাংক খাতেও অনেক বিশৃঙ্খলা ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মিত তদারকিতে তা একটা জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে। আইডিআরএর সাম্প্রতিক উদ্যোগগুলো বিমা খাতকেও একটি সুশৃঙ্খল জায়গা তৈরি করে দেবে বলে তিনি মনে করেন।
অন্য একটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রথম আলোকে বলেন, দেরিতে হলেও আইডিআরএর এই উদ্যোগ বিমা খাতের জন্য শুভ ফল বয়ে আনবে। তবে হীন স্বার্থে আঘাত লাগায় আইডিআরএর সব শুভ উদ্যোগে কেউ কেউ বিরোধিতা করতে পারে। আইডিআরএকে এ জন্য সতর্ক থাকতে হবে।
যোগাযোগ করলে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের প্রজ্ঞাপন তাঁর হাতে এসে এখনো পৌঁছায়নি। তবে বিমা খাতের স্বার্থের কোনো উদ্যোগ নিলে তা বাস্তবায়নের জন্য আইডিআরএর পাশে তিনিও থাকবেন বলে জানান।
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2011-09-29/news/189567
দেশের পুনর্বিমা দায় বহনকারী একমাত্র রাষ্ট্রীয় সংস্থা সাধারণ বিমা করপোরেশন (এসবিসি) ও বেসরকারি খাতের ৪৩টি সাধারণ বিমা কোম্পানির উদ্দেশ্যে গতকাল বুধবার এ ব্যাপারে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইডিআরএ।
যোগাযোগ করলে আইডিআরএর চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, বিমা খাতে অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার স্বার্থেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে নিয়মিত ভিত্তিতে তাদের যাবতীয় তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাতে হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আইডিআরএর সদস্য নবগোপাল বণিক স্বাক্ষরিত এই প্রজ্ঞাপনে কোম্পানিগুলোকে গত মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত চার মাসের যাবতীয় ব্যাংক হিসাবের তথ্য আগামী ৯ অক্টোবরের মধ্যে আইডিআরএর কাছে পাঠানোর কথা বলা হয়েছে।
আর সেপ্টেম্বর থেকে এই তথ্য পাঠাতে হবে নিয়মিত মাসিক ভিত্তিতে। অর্থাৎ এক মাসের প্রতিবেদন পাঠাতে হবে পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে। সে হিসেবে, চলতি সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদন ১৫ অক্টোবরের মধ্যে আইডিআরের কাছে পাঠাতে হবে।
এতে বলা হয়েছে, কোম্পানির নামে যেসব ব্যাংক হিসাব রয়েছে সেগুলো এবং সরাসরি কোম্পানির নামে নয় কিন্তু কোম্পানির ব্যবসার সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যাংকের এমন হিসাবের তথ্যও আইডিআরএর কাছে পাঠাতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, নতুন কোনো ব্যাংক হিসাব খোলা বা কোনো ব্যাংক হিসাব বন্ধ হওয়ার পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তা জানাতে হবে আইডিআরএকে।
কোনো তথ্য গোপন করলে বা ভুল তথ্য পাঠালে বিদ্যমান বিমা আইন ও বিমা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ আইনের ধারা অনুযায়ী লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে জরিমানাসহ অন্যান্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনের সঙ্গে তথ্য পাঠানোর তিনটি নির্দিষ্ট ছকও তৈরি করে দিয়েছে আইডিআরএ এবং এ ছক অনুসরণ করার কথা কেম্পানিগুলোকে বলা হয়েছে। একটি ছক প্রধান কার্যালয়ের জন্য, বাকি দুটি প্রিন্সিপাল শাখা ও অন্যান্য শাখার জন্য।
প্রধান কার্যালয়ের ক্ষেত্রে কোম্পানির নাম, কোম্পানির প্রধান ও নিবন্ধিত কার্যালয়ের ঠিকানা, ব্যবসা শুরুর সময়, মোট শাখা, বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব খোলা বা বন্ধের তারিখ ইত্যাদি উল্লেখ করতে হবে। প্রিন্সিপাল ও শাখাগুলোর ক্ষেত্রে অগ্নি, নৌ, মোটর, বিবিধ বিমার আলাদা আলাদা বিবরণ দিতে হবে।
আইডিআরএ সূত্র জানায়, বেশির ভাগ সাধারণ বিমা কোম্পানি দীর্ঘ বছর ধরে যাচ্ছেতাইভাবে চলে আসছিল। ফলে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এ খাতটিতে কিছুটা ভাবমূর্তি সংকট তৈরি হয়েছে। এ সংকট দূর করতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা দরকার। তা ফিরিয়ে আনতেই এসব তথ্য চাওয়ার এ প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়েছে।
নিটল ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান মাতলুব আহমাদ প্রথম আলোকে বলেন, বিমা খাতে বলা যায় অরাজকতা চলছে। একসময় ব্যাংক খাতেও অনেক বিশৃঙ্খলা ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মিত তদারকিতে তা একটা জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে। আইডিআরএর সাম্প্রতিক উদ্যোগগুলো বিমা খাতকেও একটি সুশৃঙ্খল জায়গা তৈরি করে দেবে বলে তিনি মনে করেন।
অন্য একটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রথম আলোকে বলেন, দেরিতে হলেও আইডিআরএর এই উদ্যোগ বিমা খাতের জন্য শুভ ফল বয়ে আনবে। তবে হীন স্বার্থে আঘাত লাগায় আইডিআরএর সব শুভ উদ্যোগে কেউ কেউ বিরোধিতা করতে পারে। আইডিআরএকে এ জন্য সতর্ক থাকতে হবে।
যোগাযোগ করলে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের প্রজ্ঞাপন তাঁর হাতে এসে এখনো পৌঁছায়নি। তবে বিমা খাতের স্বার্থের কোনো উদ্যোগ নিলে তা বাস্তবায়নের জন্য আইডিআরএর পাশে তিনিও থাকবেন বলে জানান।
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2011-09-29/news/189567
Comments
Post a Comment