উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পরও সমস্যার সমাধান হয়নি মিউচুয়াল ফান্ডের। এর পেছনে বারবারই কাজ করছে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) হঠকারিতা। সরকারের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণের সর্বোচ্চ এ প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন সময়ে নেওয়া নানা সিদ্ধান্তে নিঃস্ব হচ্ছেন লাখ লাখ বিনিয়োগকারী। ফলে উচ্চ আদালতের স্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও মিউচুয়াল ফান্ডগুলো যখনই স্টক ডিভিডেন্ট বা রাইট শেয়ার ইস্যুর সিদ্ধান্ত নেয়, তখনই বেঁকে বসে এসইসি। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, উচ্চ আদালতের সুস্পষ্ট নির্দেশনার পরও এসইসি যদি মিউচুয়াল ফান্ড সম্পর্কে তার হঠকারিতা থেকে সরে না আসে, তাহলে এর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাবে পুঁজিবাজার বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। পুঁজিবাজারে অন্যতম খাত মিউচুয়াল ফান্ড। সরকারি প্রতিষ্ঠান আইসিবির কয়েকটিসহ বাজারে ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে। আর পুঁজিবাজারের ভারসাম্য রক্ষায় বিভিন্ন সময় এসব মিউচুয়াল ফান্ডের অনুমোদন দেওয়া হয়। অথচ পুঁজিবাজারকে যারা বাঁচিয়ে রাখবে, সেই মিউচুয়াল ফান্ডকেই মেরে ফেলার বড় ষড়যন্ত্র অনেক দিন ধরে চালিয়ে আসছে একটি মহল। তারা বিভিন্ন সময় এসইসিকে প্রভাবিত করে এ খাতকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে।
সরকারের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, মিউচুয়াল ফান্ড নিয়ে কারসাজির বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে। এ বিষয়ে এরই মধ্যে প্রমাণ ও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ শুরুর কথা ভাবা হচ্ছে। সরকার এ বিষয়ে পরিষ্কার হতে চায় যে কারা ওই বিশেষ মহলের সঙ্গে যুক্ত, যারা মিউচুয়াল ফান্ড নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকার পরও এরই মধ্যে এসইসি দুটি মিউচুয়াল ফান্ডের বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণার পরপর লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া ষড়যন্ত্রের অংশ কি না, এ বিষয়টিও বিবেচনার দাবি রাখে। কারণ সরকারের অর্থনীতি সম্পর্কিত উদ্যোগগুলোকে ভালো চোখে দেখছে না ওই মহলটি। তারা প্রকারান্তরে সরকার যাতে বিভিন্ন খাতে ধরাশায়ী হয়, সে ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে বহু দিন ধরে। পুঁজিবাজারে অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ-ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করে থাকেন। বাজারে মেয়াদি ও অমেয়াদি দুই ধরনের মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে। ফান্ডগুলো বিনিয়োগকারীদের বোনাস লভ্যাংশ দিলে এ খাতের ব্যাপক চাহিদার সৃষ্টি হয়। ২০১০ সালের শেষ দিকে পুঁজিবাজারে ব্যাপক ধসের পর বিনিয়োগকারীদের ভরসার জায়গা হয় মিউচুয়াল ফান্ড। একই সময় বাজারে তারল্য সংকট কাটাতে বাংলাদেশ ফান্ড নামে পাঁচ হাজার কোটি টাকার আরও একটি ফান্ড গঠিত হয়। তবে পরবর্তী সময়ে মিউচুয়াল ফান্ডের অগ্রগতিতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় এসইসি। এর আগে ২০০৮ সালে সরকারি এ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি কয়েকটি মিউচুয়াল ফান্ডের বোনাস লভ্যাংশ ও রাইট ইস্যু নাকচ করে দিলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইব্রাহীম আকন্দ নামে এক বিনিয়োগকারী উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করেন। গত বছরও আবুল হোসেন নামে আরেক বিনিয়োগকারী পৃথক রিট আবেদন করেন। দুজনের রিটের বিষয়বস্তুও এক। অর্থাৎ মিউচুয়াল ফান্ডগুলো যেখানে বোনাস লভ্যাংশ ও রাইট শেয়ার ইস্যু করে তা যেন বাতিল করা না হয়। দ্বিতীয় রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১০ অক্টোবর হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দা আফসার জাহান ও বিচারপতি মামনুন রহমানের সমন্বয়ে দ্বৈত বেঞ্চ বেশকিছু নির্দেশনামূলক সিদ্ধান্ত দেন। আদালত তার সিদ্ধান্তে বলেন, যেসব মিউচুয়াল ফান্ড ২০০৭ সালের আগে গঠিত হয়েছে, সেসব ফান্ডের বোনাস লভ্যাংশ ও রাইট শেয়ার ইস্যুতে কোনো বাধা নেই। তবে আদালত এর সঙ্গে শর্ত জুড়ে দিয়ে বলেন, ফান্ডগুলো এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর এসইসিকে অবহিত করতে হবে এবং এসইসির অনুমোদনসাপেক্ষে তা গৃহীত হবে। একই ধরনের সিদ্ধান্ত আসে ইব্রাহীম আকন্দের করা প্রথম রিটের ক্ষেত্রেও। হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকীর দ্বৈত বেঞ্চ এ রিটে প্রায় একই ধরনের নির্দেশনা দেন। ফলে গত বছর এইমস-ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা কার্যকর হয়। কিন্তু পৃথক দুটি রিটে উচ্চ আদালতের পৃথক দুটি বেঞ্চ প্রায় একই ধরনের সিদ্ধান্ত দেওয়ার পরও এসইসির কর্মকাণ্ড আগের মতোই রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে মিউচুয়াল ফান্ড গ্রামীণ-ওয়ান শেয়ার-হোল্ডারদের জন্য ২৫ শতাংশ নগদ ও ৫০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ট এবং গ্রামীণ-টু ১০ শতাংশ স্টক ও ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। কিন্তু এসইসি হঠাৎ করেই ২৫ আগস্ট ফান্ড দুটির লেনদেন বন্ধ করে দেয়। আবুল হোসেন বনাম সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও অন্যান্য রিটের বর্ণনায় বলা হয়, আমাদের পাশের দেশসমূহে, বিশেষ করে ভারত ও পাকিস্তানে এ ধরনের মিউচুয়াল ফান্ড আইনগতভাবে লভ্যাংশ দিয়ে থাকে বা তারা রাইট ইস্যু করে ফান্ডের ইউনিট-সংখ্যা ও মেয়াদ বৃদ্ধি করতে পারে। বাংলাদেশের বর্তমান বাজারে মিউচুয়াল ফান্ডের ব্যাপক চাহিদা থাকার পরও এসইসির হঠকারিতায় এ খাত অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে, তাতে বিনিয়োগকারীদের ব্যাপক আস্থার সংকট তৈরি হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, এসইসির কয়েকজন কর্মকর্তা মিউচুয়াল ফান্ড সম্পর্কিত অপতৎপরতার মাধ্যমে বিরাট অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
সরকারের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, মিউচুয়াল ফান্ড নিয়ে কারসাজির বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে। এ বিষয়ে এরই মধ্যে প্রমাণ ও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ শুরুর কথা ভাবা হচ্ছে। সরকার এ বিষয়ে পরিষ্কার হতে চায় যে কারা ওই বিশেষ মহলের সঙ্গে যুক্ত, যারা মিউচুয়াল ফান্ড নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকার পরও এরই মধ্যে এসইসি দুটি মিউচুয়াল ফান্ডের বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণার পরপর লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া ষড়যন্ত্রের অংশ কি না, এ বিষয়টিও বিবেচনার দাবি রাখে। কারণ সরকারের অর্থনীতি সম্পর্কিত উদ্যোগগুলোকে ভালো চোখে দেখছে না ওই মহলটি। তারা প্রকারান্তরে সরকার যাতে বিভিন্ন খাতে ধরাশায়ী হয়, সে ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে বহু দিন ধরে। পুঁজিবাজারে অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ-ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করে থাকেন। বাজারে মেয়াদি ও অমেয়াদি দুই ধরনের মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে। ফান্ডগুলো বিনিয়োগকারীদের বোনাস লভ্যাংশ দিলে এ খাতের ব্যাপক চাহিদার সৃষ্টি হয়। ২০১০ সালের শেষ দিকে পুঁজিবাজারে ব্যাপক ধসের পর বিনিয়োগকারীদের ভরসার জায়গা হয় মিউচুয়াল ফান্ড। একই সময় বাজারে তারল্য সংকট কাটাতে বাংলাদেশ ফান্ড নামে পাঁচ হাজার কোটি টাকার আরও একটি ফান্ড গঠিত হয়। তবে পরবর্তী সময়ে মিউচুয়াল ফান্ডের অগ্রগতিতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় এসইসি। এর আগে ২০০৮ সালে সরকারি এ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি কয়েকটি মিউচুয়াল ফান্ডের বোনাস লভ্যাংশ ও রাইট ইস্যু নাকচ করে দিলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইব্রাহীম আকন্দ নামে এক বিনিয়োগকারী উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করেন। গত বছরও আবুল হোসেন নামে আরেক বিনিয়োগকারী পৃথক রিট আবেদন করেন। দুজনের রিটের বিষয়বস্তুও এক। অর্থাৎ মিউচুয়াল ফান্ডগুলো যেখানে বোনাস লভ্যাংশ ও রাইট শেয়ার ইস্যু করে তা যেন বাতিল করা না হয়। দ্বিতীয় রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১০ অক্টোবর হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দা আফসার জাহান ও বিচারপতি মামনুন রহমানের সমন্বয়ে দ্বৈত বেঞ্চ বেশকিছু নির্দেশনামূলক সিদ্ধান্ত দেন। আদালত তার সিদ্ধান্তে বলেন, যেসব মিউচুয়াল ফান্ড ২০০৭ সালের আগে গঠিত হয়েছে, সেসব ফান্ডের বোনাস লভ্যাংশ ও রাইট শেয়ার ইস্যুতে কোনো বাধা নেই। তবে আদালত এর সঙ্গে শর্ত জুড়ে দিয়ে বলেন, ফান্ডগুলো এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর এসইসিকে অবহিত করতে হবে এবং এসইসির অনুমোদনসাপেক্ষে তা গৃহীত হবে। একই ধরনের সিদ্ধান্ত আসে ইব্রাহীম আকন্দের করা প্রথম রিটের ক্ষেত্রেও। হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকীর দ্বৈত বেঞ্চ এ রিটে প্রায় একই ধরনের নির্দেশনা দেন। ফলে গত বছর এইমস-ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা কার্যকর হয়। কিন্তু পৃথক দুটি রিটে উচ্চ আদালতের পৃথক দুটি বেঞ্চ প্রায় একই ধরনের সিদ্ধান্ত দেওয়ার পরও এসইসির কর্মকাণ্ড আগের মতোই রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে মিউচুয়াল ফান্ড গ্রামীণ-ওয়ান শেয়ার-হোল্ডারদের জন্য ২৫ শতাংশ নগদ ও ৫০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ট এবং গ্রামীণ-টু ১০ শতাংশ স্টক ও ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। কিন্তু এসইসি হঠাৎ করেই ২৫ আগস্ট ফান্ড দুটির লেনদেন বন্ধ করে দেয়। আবুল হোসেন বনাম সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও অন্যান্য রিটের বর্ণনায় বলা হয়, আমাদের পাশের দেশসমূহে, বিশেষ করে ভারত ও পাকিস্তানে এ ধরনের মিউচুয়াল ফান্ড আইনগতভাবে লভ্যাংশ দিয়ে থাকে বা তারা রাইট ইস্যু করে ফান্ডের ইউনিট-সংখ্যা ও মেয়াদ বৃদ্ধি করতে পারে। বাংলাদেশের বর্তমান বাজারে মিউচুয়াল ফান্ডের ব্যাপক চাহিদা থাকার পরও এসইসির হঠকারিতায় এ খাত অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে, তাতে বিনিয়োগকারীদের ব্যাপক আস্থার সংকট তৈরি হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, এসইসির কয়েকজন কর্মকর্তা মিউচুয়াল ফান্ড সম্পর্কিত অপতৎপরতার মাধ্যমে বিরাট অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
Comments
Post a Comment