দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে সিমেন্টের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা বিবেচনা করে উত্পাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সিমেন্ট উত্পাদক কোম্পানিগুলো। এ ধারাবাহিকতায় ২০১২ সালে সিমেন্ট উত্পাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে ২ কোটি ১০ লাখ টন, প্রবৃদ্ধি ঘটবে ৪৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ। বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য এবং সিটি ব্রোকারেজ লিমিটেড প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ: দ্য রোরিং ইকোনমি’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারের হাতে নেয়া বড় বড় কয়েকটি প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় সিমেন্টের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এছাড়া কিছুটা শ্লথ হয়ে পড়া আবাসন খাত পুনরায় ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করায় এ চাহিদা আরও বাড়বে বলে আশা করছেন বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল। বণিক বার্তাকে তিনি জানান, গত বছর সিমেন্ট শিল্পের প্রবৃদ্ধি ছিল বেশ ভালো। ২০১০ সালে দেশে মোট সিমেন্ট উত্পাদনের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৪৫ লাখ টন। এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী বছর এ খাতে ২১ দশমিক ৬২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটে উত্পাদন দাঁড়াবে ১ কোটি ৮৫ লাখ টন। আর পরবর্তী বছর অর্থাত্ ২০১২ সালে প্রবৃদ্ধি হবে ১৩ শতাংশ।
অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য মতে, উত্পাদনের পরিমাণ ও উত্পাদন ক্ষমতা উভয় দিক থেকে বর্তমানে সিমেন্টের বাজারে শীর্ষস্থানে রয়েছে আবুল খায়ের গ্রুপের শাহ সিমেন্ট। ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানটির দৈনিক উত্পাদন ক্ষমতা ছিল ৭ হাজার ৫০০ টন। আর ২০১২ সালে তা বেড়ে দাঁড়াবে ১০ হাজার ৫০০ টন।
সিমেন্ট উত্পাদনে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির উত্পাদিত রুবি এবং স্ক্যান ব্র্যান্ড মিলে গত বছর তাদের দৈনিক উত্পাদন ক্ষমতা ছিল ৫ হাজার ৮০০ টন, আগামী বছরে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৭ হাজার ৫০০ টনে। গত বছর এ খাতে তৃতীয় স্থানে ছিল বসুন্ধরা গ্রুপের মেঘনা সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজের কিং ব্র্যান্ড সিমেন্ট। ২০১০ সালে
এ ব্র্যান্ডের দৈনিক উত্পাদন ক্ষমতা ছিল ৪ হাজার ৫০০ টন। আগামী বছর
এ ক্ষমতা বেড়ে দাঁড়াবে ৭ হাজার ৫০০ টন আর উত্পাদন ক্ষমতার দিক থেকে তখন প্রতিষ্ঠানটি যৌথভাবে দ্বিতীয় অবস্থানে চলে আসবে। এ বিষয়ে মেঘনা সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজের বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের প্রধান খন্দকার কিংশুক হোসেন বলেন, উত্পাদন শুরুর পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটি বছরে ১০ থেকে ১২ শতাংশ করে প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। তাদের লক্ষ্য আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সিমেন্ট শিল্পে প্রথম স্থান দখল করা।
এদিকে সিমেন্ট উত্পাদন অ্যাসোসিয়েশনের পূর্বাভাস অনুযায়ী, উত্পাদন ক্ষমতার দিক থেকে মেঘনা গ্রুপের ফ্রেশ সিমেন্ট ২০১০ সালে অষ্টম স্থানে থাকলেও ২০১২ সালে তারা তৃতীয় স্থানে উঠে আসবে। গত বছর ফ্রেশ সিমেন্টের দৈনিক উত্পাদন ক্ষমতা ছিল ২ হাজার ৮০০ টন আর আগামী বছর তা বেড়ে দাঁড়াবে ৫ হাজার ৮০০ টন।
হংকংয়ের সান সাইন গ্রুপের সেভেন সার্কেল সিমেন্ট উত্পাদন ক্ষমতার দিক গত বছর সপ্তম স্থানে থাকলেও আগামী বছর উঠে আসবে চতুর্থ স্থানে। তখন তাদের দৈনিক উত্পাদন ক্ষমতা দাঁড়াবে ৪ হাজার ৫০০ টন, যা ২০১০ সালে ছিল দৈনিক ৩ হাজার ২০০ টন।
উত্পাদন ক্ষমতার দিক থেকে গত বছর মদিনা গ্রুপের টাইগার সিমেন্টের অবস্থান ১১তম হলেও আগামী বছর তারা পঞ্চম স্থানে উঠে আসবে। ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানটির দৈনিক উত্পাদন ক্ষমতা এক হাজর ৫০০ টন হলেও আগামী বছর তা বেড়ে দাঁড়াবে ৪ হাজার ৫০০ টন। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয় ও বিপণন ব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা বলেন, টাইগার সিমেন্টের জোগানের তুলনায় চাহিদা সবসময় বেশি থাকে। তাই আগামী বছরের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি দৈনিক উত্পাদন ক্ষমতা ৩ হাজার টন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সিমেন্ট উত্পাদন প্রতিষ্ঠানগুলোর উত্পাদন ক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়ে মোস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশে বড় বড় কয়েকটি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। আবার নতুন কিছু প্রকল্পের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। এসব চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে বিভিন্ন সিমেন্ট উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠান তাদের উত্পাদন ক্ষমতা বাড়াচ্ছে। গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকায় বর্তমানে আবাসন
খাতের প্রবৃদ্ধি কিছুটা কম। তবে গ্যাসের সংযোগ দেয়া শুরু হলে দেশে সিমেন্ট চাহিদা আরও বাড়বে। তখন এ শিল্পের আরও দ্রুত প্রসার ঘটবে। ক্রমবর্ধমান এই চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখেই নিজেদের প্রস্তুত করছে সিমেন্ট উত্পাদনকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
গবেষণা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ১৯৯৯ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দশ বছরে বাংলাদেশে সিমেন্টের ব্যবহার বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশে সিমেন্টের মাথাপিছু ব্যবহারের পরিমাণ ছিল ২২ কেজি। আর ২০০৯ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৫ কেজি। তবে বাংলাদেশে সিমেন্টের মাথাপিছু ব্যবহার বিশ্বের অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে বেশ কম, এমনকি বিশ্বের গড় সিমেন্ট ব্যবহারের চেয়েও অনেক কম।
২০০৯ সালে সারাবিশ্বে মাথাপিছু গড় সিমেন্ট ব্যবহারের পরিমাণ ছিল ৪৩০ কেজি। ভিয়েতনামে মাথাপিছু সিমেন্ট ব্যবহারের পরিমাণ ৪০৮ কেজি, শ্রীলংকায় ১৭৮ কেজি, ভারতে ১৭৪ কেজি ও পাকিস্তানে ১৩১ কেজি।
এ বিষয়ে মোস্তফা কামাল বলেন, চীন বা ভারতের সিমেন্ট শিল্পের প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি। তবে বর্তমানে বাংলাদেশে এ শিল্পটি দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। এতে মাথাপিছু সিমেন্ট ব্যবহারের পরিমাণ বাড়বে। তিনি আরও বলেন, দেশে অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ যত বেশি হবে সিমেন্ট শিল্পের উন্নয়নও তত দ্রুত ঘটবে।খাতের প্রবৃদ্ধি কিছুটা কম। তবে গ্যাসের সংযোগ দেয়া শুরু হলে দেশে সিমেন্ট চাহিদা আরও বাড়বে। তখন এ শিল্পের আরও দ্রুত প্রসার ঘটবে। ক্রমবর্ধমান এই চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখেই নিজেদের প্রস্তুত করছে সিমেন্ট উত্পাদনকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
গবেষণা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ১৯৯৯ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দশ বছরে বাংলাদেশে সিমেন্টের ব্যবহার বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশে সিমেন্টের মাথাপিছু ব্যবহারের পরিমাণ ছিল ২২ কেজি। আর ২০০৯ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৫ কেজি। তবে বাংলাদেশে সিমেন্টের মাথাপিছু ব্যবহার বিশ্বের অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে বেশ কম, এমনকি বিশ্বের গড় সিমেন্ট ব্যবহারের চেয়েও অনেক কম।
২০০৯ সালে সারাবিশ্বে মাথাপিছু গড় সিমেন্ট ব্যবহারের পরিমাণ ছিল ৪৩০ কেজি। ভিয়েতনামে মাথাপিছু সিমেন্ট ব্যবহারের পরিমাণ ৪০৮ কেজি, শ্রীলংকায় ১৭৮ কেজি, ভারতে ১৭৪ কেজি ও পাকিস্তানে ১৩১ কেজি।
এ বিষয়ে মোস্তফা কামাল বলেন, চীন বা ভারতের সিমেন্ট শিল্পের প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি। তবে বর্তমানে বাংলাদেশে এ শিল্পটি দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। এতে মাথাপিছু সিমেন্ট ব্যবহারের পরিমাণ বাড়বে। তিনি আরও বলেন, দেশে অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ যত বেশি হবে সিমেন্ট শিল্পের উন্নয়নও তত দ্রুত ঘটবে।
Comments
Post a Comment