শাসন মেয়াদের প্রায় মধ্যভাগে এসে গ্যাস উত্তোলন দ্রুত বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের গবেষণা শাখা ‘হাইড্রোকার্বন ইউনিট’-এর একটি সমীক্ষা প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এই পদক্ষেপের তিনটি অধ্যায় হলো: দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলোর উৎপাদনরত কূপগুলোর উপরিভাগের কিছু যন্ত্রপাতি পরিবর্তন; উৎপাদনরত কূপগুলোর কিছু সংস্কার (ওয়েল লাইন ইন্টারভেনশন) এবং কূপগুলোর উত্তোলন পাইপ (টিউব) বদলে দেওয়া। বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড (বিজিএফসিএল) ইতিমধ্যে প্রথম অধ্যায়ের কাজ শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি সূত্রগুলো জানায়, এসব পদক্ষেপের ফলে অল্প খরচে এক বছরের মধ্যে গ্যাসের বর্তমান ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হবে। ইতিমধ্যে নেওয়া পেট্রোবাংলার কার্যক্রমের মাধ্যমে চলমান গ্যাস-সংকট কাটিয়ে উঠতে আরও প্রায় দুই বছর লাগবে—এমন বাস্তবতায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
এসব পদক্ষেপ নিয়ে দ্রুত গ্যাস উত্তোলন বাড়ানোর কথা বর্তমান সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের শুরু থেকেই দেশের একাধিক বিশেষজ্ঞ-পেশাজীবী বলছিলেন। কিন্তু তখন এসব কার্যক্রম না নিয়ে ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ নামে দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য কিছু কার্যক্রম নেওয়া হয়। তথাকথিত ওই ফাস্ট ট্র্যাকের কার্যক্রম এখন পর্যন্ত শুরুই করা যায়নি।
এ ছাড়া কয়েকটি কূপ সংস্কার (ওয়ার্কওভার) এবং কয়েকটি নতুন কূপ স্থাপনসহ গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর যেসব কার্যক্রম নেওয়া হয়, তা গ্যাস-সংকট নিরসনে তেমন ভূমিকা রাখতে পারেনি। বর্তমান সরকারের আমলে এখন পর্যন্ত গ্যাসের উৎপাদন বেড়েছে ২০ কোটি ঘনফুটেরও কম। পেট্রোবাংলার সর্বশেষ আভাস অনুযায়ী, বর্তমানে গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর যেসব কার্যক্রম চলছে, তাতে আগামী বছরের শেষ নাগাদ চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হতে পারে।
সরকারি হিসাবে বর্তমানে দেশে গ্যাসের সর্বোচ্চ চাহিদা প্রতিদিন ২৫০ কোটি ঘনফুট। আর উৎপাদন হচ্ছে ২০০ কোটি ঘনফুট। এই ঘাটতির কারণে গ্যাসের নতুন সংযোগ দেওয়া বন্ধ রাখতে হয়েছে।
এডিবির অর্থায়নে প্রকল্প: শেষ পর্যন্ত গত বছরের অক্টোবরে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে সরকার একটি প্রকল্প নেয় দুটি বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য। এক, রাষ্ট্রীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে কীভাবে উৎপাদন বাড়ানো যায় এবং দুই, রাষ্ট্রীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলোর প্রতিটি কূপের উৎপাদন এ দেশে কর্মরত বিদেশি কোম্পানিগুলোর তুলনায় অনেক কম হওয়ার কারণ কী। এই কাজের জন্য ফরাসি কোম্পানি মেসার্স স্লাম বার্জার ও সরকারের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়, যার বাস্তবায়নকারী সংস্থা হাইড্রোকার্বন ইউনিট।
কাজটির জন্য দুজন পরামর্শকের একজন ছিলেন ওই ফরাসি কোম্পানির বিশেষজ্ঞ রাজিব সাগর এবং অন্যজন পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক মকবুল-ই-এলাহী। গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে তাঁরা কাজ শুরু করেন। নির্ধারিত ছয় মাসের মধ্যে তাঁরা কাজটি শেষ করেছেন।
সরকারি সূত্র জানায়, এই কাজের অংশ হিসেবে পরামর্শক ও তাঁদের সহযোগীরা রাষ্ট্রীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলোর উৎপাদনরত ৪৯টি এবং বিদেশি কোম্পানির পরিচালিত গ্যাসক্ষেত্রের চারটি কূপ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তিনটি সুপারিশ করা হয়।
সুপারিশগুলো কী: প্রথম সুপারিশ হচ্ছে কূপগুলোর উপরিভাগের কিছু যন্ত্রপাতি (ভাল্ব, চোক, রেগুলেটর প্রভৃতি) পরিবর্তন করা। যেমন, প্রায় ৪০ বছর আগে কোনো একটি কূপের গ্যাসের চাপ (প্রায় তিন হাজার পিএসআই) কমিয়ে প্রক্রিয়াকরণ প্লান্টে গ্যাস পাঠানোর জন্য দুটি ভাল্ব বসানো হয়েছিল। এখন ওই কূপের গ্যাসের চাপ স্বাভাবিক প্রাকৃতিক কারণেই কমে হয়েছে এক হাজার ৬০০ পিএসআই। কাজেই এখন তো আর চাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য আগে ওই ভাল্বের দরকার নেই। ওই সব ভাল্ব তো এখন গ্যাসের চাপ প্রয়োজনের তুলনায় নিচে নামিয়ে দিচ্ছে। তাই এখন ওই ভাল্ব অপসারণ করলেই গ্যাসের চাপ স্বাভাবিক হবে। এ ধরনের কাজ করতে প্রতিটি কূপের জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার ব্যয় হতে পারে। এই কাজ এক সপ্তাহের মধ্যে শুরু করে এক মাসের মধ্যে শেষ করা সম্ভব। আর এই ব্যবস্থার ফলে গ্যাসের উৎপাদন বাড়বে দৈনিক মোট ১৫ থেকে ২০ কোটি ঘনফুট।
দ্বিতীয় সুপারিশ হলো উৎপাদনরত কূপগুলোর ভেতরে কিছু সংস্কারের কাজ করা (ওয়েল লাইন ইন্টারভেনশন)। এই কাজে প্রায় ছয় মাস লাগতে পারে। প্রতিটি কূপের পেছনে ব্যয় হতে পারে এক থেকে দেড় লাখ ডলার। আর উৎপাদন বাড়তে পারে মোট সাত থেকে ১০ কোটি ঘনফুট।
তৃতীয় সুপারিশে বলা হয়েছে, কূপগুলোর উত্তোলন পাইপ (টিউব) বদলে দেওয়ার কথা। এই কাজে প্রতিটি কূপের জন্য ব্যয় হতে পারে ২০ থেকে ৩০ লাখ ডলার। উৎপাদন বাড়বে ২০ থেকে ৩০ কোটি ঘনফুট। এক বছরের মধ্যে এই কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব।
সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, যথাযথভাবে এসব কাজ করা হলে এক বছরের মধ্যে দৈনিক ৩৫ থেকে ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব।
চারটি উপস্থাপনা: সমীক্ষা প্রতিবেদনটি সম্পর্কে এখন পর্যন্ত মোট চারটি উপস্থাপনার আয়োজন করা হয়। প্রথমে বিজিএফসিএল, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (এসজিএফএল) এবং বাপেক্সের কর্মকর্তাদের সামনে এটি উপস্থাপন করা হয়। এরপর শুধু বাপেক্সের কর্মকর্তাদের জন্য একটি উপস্থাপনার আয়োজন করা হয়। ওই দুটি উপস্থাপনায় অংশ নেওয়া সব কর্মকর্তাই বিষয়টি জেনে-বুঝে খুবই উৎসাহিত হয়েছেন বলে কোম্পানিগুলোর সূত্র জানায়।
এরপর গত শনিবার হাইড্রোকার্বন ইউনিট মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারক ও পেট্রোবাংলার কর্মকর্তাদের জন্য একটি উপস্থাপনার আয়োজন করে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুলশানের একটি অভিজাত হোটেলে আরেকটি উপস্থাপনার আয়োজন করা হয়। সেখানে সরকারি নীতিনির্ধারক এবং শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-গবেষকেরা উপস্থিত ছিলেন।
পাইপলাইনের সীমাবদ্ধতা: সংশ্লিষ্ট সরকারি সূত্রগুলো জানায়, গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি সঞ্চালন লাইনের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে বিশেষ করে চট্টগ্রাম অঞ্চলের গ্যাস-সংকট নিরসনে মাত্র ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন বসানোর কাজটিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে সাত কিলোমিটার পাইপলাইন তিতাস গ্যাসক্ষেত্রকে আশুগঞ্জ-বাখরাবাদ (এবি) পাইপলাইনের সঙ্গে সংযুক্ত করবে। বাকি তিন কিলোমিটার তিতাস গ্যাসক্ষেত্রেরই নিজস্ব সঞ্চালনব্যবস্থাকে আরও সমৃদ্ধ করার জন্য দরকার।
এ দুটি পাইপলাইন বসাতে সর্বোচ্চ ৩৫ কোটি টাকা লাগতে পারে। কাজ শুরু করা হলে সময় লাগতে পারে এক মাস। তবে জমি অধিগ্রহণে কিছুটা বেশি সময় লাগবে। কিন্তু এটা অবশ্যই আগামী শুকনো মৌসুমের মধ্যে সম্পন্ন করা সম্ভব।
এই পদক্ষেপের তিনটি অধ্যায় হলো: দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলোর উৎপাদনরত কূপগুলোর উপরিভাগের কিছু যন্ত্রপাতি পরিবর্তন; উৎপাদনরত কূপগুলোর কিছু সংস্কার (ওয়েল লাইন ইন্টারভেনশন) এবং কূপগুলোর উত্তোলন পাইপ (টিউব) বদলে দেওয়া। বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড (বিজিএফসিএল) ইতিমধ্যে প্রথম অধ্যায়ের কাজ শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি সূত্রগুলো জানায়, এসব পদক্ষেপের ফলে অল্প খরচে এক বছরের মধ্যে গ্যাসের বর্তমান ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হবে। ইতিমধ্যে নেওয়া পেট্রোবাংলার কার্যক্রমের মাধ্যমে চলমান গ্যাস-সংকট কাটিয়ে উঠতে আরও প্রায় দুই বছর লাগবে—এমন বাস্তবতায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
এসব পদক্ষেপ নিয়ে দ্রুত গ্যাস উত্তোলন বাড়ানোর কথা বর্তমান সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের শুরু থেকেই দেশের একাধিক বিশেষজ্ঞ-পেশাজীবী বলছিলেন। কিন্তু তখন এসব কার্যক্রম না নিয়ে ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ নামে দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য কিছু কার্যক্রম নেওয়া হয়। তথাকথিত ওই ফাস্ট ট্র্যাকের কার্যক্রম এখন পর্যন্ত শুরুই করা যায়নি।
এ ছাড়া কয়েকটি কূপ সংস্কার (ওয়ার্কওভার) এবং কয়েকটি নতুন কূপ স্থাপনসহ গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর যেসব কার্যক্রম নেওয়া হয়, তা গ্যাস-সংকট নিরসনে তেমন ভূমিকা রাখতে পারেনি। বর্তমান সরকারের আমলে এখন পর্যন্ত গ্যাসের উৎপাদন বেড়েছে ২০ কোটি ঘনফুটেরও কম। পেট্রোবাংলার সর্বশেষ আভাস অনুযায়ী, বর্তমানে গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর যেসব কার্যক্রম চলছে, তাতে আগামী বছরের শেষ নাগাদ চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হতে পারে।
সরকারি হিসাবে বর্তমানে দেশে গ্যাসের সর্বোচ্চ চাহিদা প্রতিদিন ২৫০ কোটি ঘনফুট। আর উৎপাদন হচ্ছে ২০০ কোটি ঘনফুট। এই ঘাটতির কারণে গ্যাসের নতুন সংযোগ দেওয়া বন্ধ রাখতে হয়েছে।
এডিবির অর্থায়নে প্রকল্প: শেষ পর্যন্ত গত বছরের অক্টোবরে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে সরকার একটি প্রকল্প নেয় দুটি বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য। এক, রাষ্ট্রীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে কীভাবে উৎপাদন বাড়ানো যায় এবং দুই, রাষ্ট্রীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলোর প্রতিটি কূপের উৎপাদন এ দেশে কর্মরত বিদেশি কোম্পানিগুলোর তুলনায় অনেক কম হওয়ার কারণ কী। এই কাজের জন্য ফরাসি কোম্পানি মেসার্স স্লাম বার্জার ও সরকারের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়, যার বাস্তবায়নকারী সংস্থা হাইড্রোকার্বন ইউনিট।
কাজটির জন্য দুজন পরামর্শকের একজন ছিলেন ওই ফরাসি কোম্পানির বিশেষজ্ঞ রাজিব সাগর এবং অন্যজন পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক মকবুল-ই-এলাহী। গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে তাঁরা কাজ শুরু করেন। নির্ধারিত ছয় মাসের মধ্যে তাঁরা কাজটি শেষ করেছেন।
সরকারি সূত্র জানায়, এই কাজের অংশ হিসেবে পরামর্শক ও তাঁদের সহযোগীরা রাষ্ট্রীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলোর উৎপাদনরত ৪৯টি এবং বিদেশি কোম্পানির পরিচালিত গ্যাসক্ষেত্রের চারটি কূপ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তিনটি সুপারিশ করা হয়।
সুপারিশগুলো কী: প্রথম সুপারিশ হচ্ছে কূপগুলোর উপরিভাগের কিছু যন্ত্রপাতি (ভাল্ব, চোক, রেগুলেটর প্রভৃতি) পরিবর্তন করা। যেমন, প্রায় ৪০ বছর আগে কোনো একটি কূপের গ্যাসের চাপ (প্রায় তিন হাজার পিএসআই) কমিয়ে প্রক্রিয়াকরণ প্লান্টে গ্যাস পাঠানোর জন্য দুটি ভাল্ব বসানো হয়েছিল। এখন ওই কূপের গ্যাসের চাপ স্বাভাবিক প্রাকৃতিক কারণেই কমে হয়েছে এক হাজার ৬০০ পিএসআই। কাজেই এখন তো আর চাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য আগে ওই ভাল্বের দরকার নেই। ওই সব ভাল্ব তো এখন গ্যাসের চাপ প্রয়োজনের তুলনায় নিচে নামিয়ে দিচ্ছে। তাই এখন ওই ভাল্ব অপসারণ করলেই গ্যাসের চাপ স্বাভাবিক হবে। এ ধরনের কাজ করতে প্রতিটি কূপের জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার ব্যয় হতে পারে। এই কাজ এক সপ্তাহের মধ্যে শুরু করে এক মাসের মধ্যে শেষ করা সম্ভব। আর এই ব্যবস্থার ফলে গ্যাসের উৎপাদন বাড়বে দৈনিক মোট ১৫ থেকে ২০ কোটি ঘনফুট।
দ্বিতীয় সুপারিশ হলো উৎপাদনরত কূপগুলোর ভেতরে কিছু সংস্কারের কাজ করা (ওয়েল লাইন ইন্টারভেনশন)। এই কাজে প্রায় ছয় মাস লাগতে পারে। প্রতিটি কূপের পেছনে ব্যয় হতে পারে এক থেকে দেড় লাখ ডলার। আর উৎপাদন বাড়তে পারে মোট সাত থেকে ১০ কোটি ঘনফুট।
তৃতীয় সুপারিশে বলা হয়েছে, কূপগুলোর উত্তোলন পাইপ (টিউব) বদলে দেওয়ার কথা। এই কাজে প্রতিটি কূপের জন্য ব্যয় হতে পারে ২০ থেকে ৩০ লাখ ডলার। উৎপাদন বাড়বে ২০ থেকে ৩০ কোটি ঘনফুট। এক বছরের মধ্যে এই কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব।
সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, যথাযথভাবে এসব কাজ করা হলে এক বছরের মধ্যে দৈনিক ৩৫ থেকে ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব।
চারটি উপস্থাপনা: সমীক্ষা প্রতিবেদনটি সম্পর্কে এখন পর্যন্ত মোট চারটি উপস্থাপনার আয়োজন করা হয়। প্রথমে বিজিএফসিএল, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (এসজিএফএল) এবং বাপেক্সের কর্মকর্তাদের সামনে এটি উপস্থাপন করা হয়। এরপর শুধু বাপেক্সের কর্মকর্তাদের জন্য একটি উপস্থাপনার আয়োজন করা হয়। ওই দুটি উপস্থাপনায় অংশ নেওয়া সব কর্মকর্তাই বিষয়টি জেনে-বুঝে খুবই উৎসাহিত হয়েছেন বলে কোম্পানিগুলোর সূত্র জানায়।
এরপর গত শনিবার হাইড্রোকার্বন ইউনিট মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারক ও পেট্রোবাংলার কর্মকর্তাদের জন্য একটি উপস্থাপনার আয়োজন করে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুলশানের একটি অভিজাত হোটেলে আরেকটি উপস্থাপনার আয়োজন করা হয়। সেখানে সরকারি নীতিনির্ধারক এবং শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-গবেষকেরা উপস্থিত ছিলেন।
পাইপলাইনের সীমাবদ্ধতা: সংশ্লিষ্ট সরকারি সূত্রগুলো জানায়, গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি সঞ্চালন লাইনের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে বিশেষ করে চট্টগ্রাম অঞ্চলের গ্যাস-সংকট নিরসনে মাত্র ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন বসানোর কাজটিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে সাত কিলোমিটার পাইপলাইন তিতাস গ্যাসক্ষেত্রকে আশুগঞ্জ-বাখরাবাদ (এবি) পাইপলাইনের সঙ্গে সংযুক্ত করবে। বাকি তিন কিলোমিটার তিতাস গ্যাসক্ষেত্রেরই নিজস্ব সঞ্চালনব্যবস্থাকে আরও সমৃদ্ধ করার জন্য দরকার।
এ দুটি পাইপলাইন বসাতে সর্বোচ্চ ৩৫ কোটি টাকা লাগতে পারে। কাজ শুরু করা হলে সময় লাগতে পারে এক মাস। তবে জমি অধিগ্রহণে কিছুটা বেশি সময় লাগবে। কিন্তু এটা অবশ্যই আগামী শুকনো মৌসুমের মধ্যে সম্পন্ন করা সম্ভব।
Comments
Post a Comment