ছয় মাস আগেও আমদানিকারকরা পণ্য আমদানিতে ১০ থেকে ১৫ ভাগ অর্থ জমা দিয়েই এলসি ঋণ বা এলটিআর সুবিধা পেতেন। এখন ৫০ ভাগ বা ক্ষেত্রবিশেষে ৬০ ভাগ অর্থ জমা দিয়েও ব্যাংকগুলোকে এলসি খুলতে রাজি করাতে পারছেন না আমদানিকারকরা। আবার যে হারে আমদানিতে এলসি খুলছে ব্যাংকগুলো, সে হারে নিষ্পত্তি হচ্ছে না। এলসি বা ঋণপত্র স্থাপনার নিষ্পত্তি অর্ধেকের নিচে নেমে গেছে। নতুন এলসি স্থাপন ও নিষ্পত্তির চেয়েও বড় সমস্যা অতিরিক্ত ব্যয়। যে মূল্য দেখিয়ে আমদানিকারক এলসি খুলছেন, পণ্য আনার পর তাকে আরও ৩ থেকে ৫ শতাংশ বাড়তি অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে চড়া মূল্যে ডলার সংগ্রহের ফলে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যতই দিন যাচ্ছে ব্যাংকিং খাতে সমস্যা ততই বাড়ছে। ঋণের সুদহার বাড়িয়েও তেমন সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। শেয়ারবাজারে ভয়াবহ সঙ্কটের পর গত কয়েক মাস ধরে ব্যাংকগুলোতে টাকা ও ডলার সঙ্কট বাড়তে থাকে। একদিকে ডলারের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, অন্যদিকে ডলার না পাওয়ায় বড় আমদানির ঋণপত্র খুলতে পারছে না অধিকাংশ ব্যাংক। অপরদিকে তারল্য (ব্যবহার উপযোগী নগদ অর্থ) সঙ্কট থাকায় চলতি মূলধন ও প্রকল্প ঋণ অনুমোদনেও হিমশিম খাচ্ছে ব্যাংকগুলো।
ব্যাংকিং খাতে নগদ টাকার সঙ্কট শুরু হয় গত বছরের শেষদিকে। ওই সময় দেশের ইতিহাসে কলমানি রেট (আন্তঃব্যাংক লেনদেন সুদের হার) সর্বোচ্চ ১৯০ শতাংশে পৌঁছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে কলরেট কমে এলেও সাম্প্রতিক কলমানি (আন্তঃব্যাংক) লেনদেন বেড়েছে ব্যাপক হারে। অপরদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহ করলেও তা বাজারের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। ফলে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, গত বছরের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে তরল সম্পদের পরিমাণ ছিল ৮৩ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা। এছাড়া ব্যাংকগুলোতে আমানত চাহিদা মেটানোর জন্য নিজস্ব ভল্ট ও সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে স্থিতি ছিল ৬ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে স্থিতি ছিল ২৭ হাজার ২১৭ কোটি টাকা। ন্যূনতম তরল সম্পদ সংরক্ষণের (এসএলআর) বাধ্যবাধকতা ছিল ৬০ হাজার ১৭২ কোটি টাকা। এর ফলে অতিরিক্ত তারল্য দাঁড়ায় ২৩ হাজার ৭২১ কোটি টাকায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বর্তমানে শেয়ারবাজারে মোট ৩২টি ব্যাংকের বিনিয়োগ আছে। এসব ব্যাংক শেয়ারবাজারে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। শেয়ারবাজারে দরপতনের ফলে ব্যাংকগুলোর বিশাল বিনিয়োগ আটকে যায়। দেখা দেয় নগদ অর্থের সঙ্কট। এতে পণ্য আমদানি বা ব্যাংক ঋণ প্রদানসহ ব্যাংকের নিয়মিত কার্যক্রমে দেখা দেয় স্থবিরতা।
ব্যাংকগুলোতে নগদ অর্থ সঙ্কটের পাশাপাশি দেখা দিয়েছে ডলার সঙ্কট। ব্যাংকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাহিদা অনুযায়ী ডলার বাজারে সরবরাহ করছে না। ফলে বাড়তি দামে ব্যাংকগুলো অপরাপর ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার কিনছে। এতে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।
ডলার সঙ্কটের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক একেবারেই চুপচাপ। তবে ব্যাংকাররা মনে করছেন ডলার পাচার হয়ে যাচ্ছে। এর ফলেই দর বাড়ছে ডলারের। যুক্তি তুলে ধরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমার দেশকে জানান, সারা বিশ্বে ডলারের অবস্থা ভালো নেই, ভালো আছে কেবল বাংলাদেশে। সর্বত্রই ডলারের দর কমছে, কেবল বাড়ছে বাংলাদেশে।
আগে যেখানে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই কোটি ডলারের লেনদেন হতো, এখন তা ৫০ লাখ ডলারে নেমে এসেছে। মূলত চাহিদার তুলনায় জোগান কম হওয়ায় বেড়েছে ডলারের দর। জানা গেছে, গত বছরের জুলাই মাসের তুলনায় ডিসেম্বরের শেষে ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান ১ দশমিক ৯৩ শতাংশ কমে গিয়েছিল। আর ডিসেম্বর মাসের তুলনায় জানুয়ারি মাসের শেষে ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতন হয়েছে প্রায় আড়াই শতাংশ। পরের মাসে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। আইএমএফ বলছে, ডলারের ঘোষিত দর ও বাজারদরের মধ্যে পার্থক্য হয়েছে সাড়ে ৩ শতাংশ, যা আইএমএফের সঙ্গে করা সমঝোতার বরখেলাপ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী গত বছর পহেলা ডিসেম্বর এক মার্কিন ডলারের বিপরীতে এক ইউরোর দর ছিল শূন্য দশমিক ৭৬৫৪। গতকাল এসে তা শূন্য দশমিক ৬৮৬৫ হয়েছে। অর্থাত্ এ সময় ডলারের মান কমে গেছে। আবার পহেলা ডিসেম্বর এক ডলারের বিপরীতে এক পাউন্ডের দর ছিল শূন্য দশমিক ৬৪৩০। গতকাল তা হয়েছে শূন্য দশমিক ৬১২৩। শুধু পাউন্ড এবং ইউরোর বিপরীতেই নয়, বিশ্বের প্রায় সব দেশের মুদ্রার বিপরীতেই ডলার ক্রমেই দুর্বল হয়ে আসছে। শুধু বিপরীত চিত্র বাংলাদেশে।
২০১০ সালের ৩০ জুন যেখানে গড়ে প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ছিল ৬৯ টাকা ৫০ পয়সা, সেখানে গতকাল এই বিনিময় হার হয়েছে ৭২ টাকা ৮২ পয়সা। অথচ ২০১০ সালের ৩১ ডিসেম্বর গড়ে এই বিনিময় হার ছিল ৭১ টাকা ১৫ পয়সা। অর্থাত্ তিন চার মাসের মধ্যেই ডলারের দর অনেকটা বেড়েছে। এর মানে হলো আগের চেয়ে বেশি দাম দিয়ে বা বাংলাদেশী টাকা দিয়ে ডলার কিনতে হচ্ছে।
অর্থনীতির সূত্র অনুযায়ী, স্থানীয় মুদ্রা তথা টাকা দুর্বল হলে রফতানিকারক ও প্রবাসী আয় প্রেরণকারীদের খুশি হওয়ার কথা। কেননা, সমপরিমাণ ডলারের বিনিময়ে আগের তুলনায় এখন তারা দেশে বেশি টাকা পাচ্ছেন। কিন্তু আমদানিকারকদের জন্য তা আবার সমস্যা। আগের চেয়ে বেশি টাকা ব্যয় করে তাদেরকে সমপরিমাণ ডলার কিনতে হচ্ছে। এতে তাদের আমদানি ব্যয় বাড়ছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান জানান, বর্তমানে ডলারের বাজারে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তার অন্যতম কারণ বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স আয় কমে যাওয়া এবং আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়া। তিনি আরও বলেন, দেশের অনেক মানুষই ডলার বৈধপথে না এনে অবৈধ পথে আনছে, যা ডলার সঙ্কটের একটি বড় কারণ।
এদিকে ডলার ও নগদ অর্থ সঙ্কটের কারণে পণ্য আমদানিতে ব্যাংকগুলো যে পরিমাণ এলসি খুলছে, তার অর্ধেকও নিষ্পত্তি করতে পারছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী গত বছর ১০ জুলাই থেকে চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে বিভিন্ন ব্যাংকে চাল আমদানির জন্য এলসি খোলা হয় ৭০৩ দশমিক ০৯ মিলিয়ন ডলারের। তবে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এলসির নিষ্পত্তি হয়েছে ৩০৮ দশমিক ০৪ মিলিয়ন ডলারের। এ সময়ে গম আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলা হয় ১১৭২ দশমিক ৩০ মিলিয়ন ডলারের। তবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গম আমদানিতে এলসির নিষ্পত্তি হয় মাত্র ৬২৫ দশমিক ৭৯ মিলিয়ন ডলারের।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যতই দিন যাচ্ছে ব্যাংকিং খাতে সমস্যা ততই বাড়ছে। ঋণের সুদহার বাড়িয়েও তেমন সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। শেয়ারবাজারে ভয়াবহ সঙ্কটের পর গত কয়েক মাস ধরে ব্যাংকগুলোতে টাকা ও ডলার সঙ্কট বাড়তে থাকে। একদিকে ডলারের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, অন্যদিকে ডলার না পাওয়ায় বড় আমদানির ঋণপত্র খুলতে পারছে না অধিকাংশ ব্যাংক। অপরদিকে তারল্য (ব্যবহার উপযোগী নগদ অর্থ) সঙ্কট থাকায় চলতি মূলধন ও প্রকল্প ঋণ অনুমোদনেও হিমশিম খাচ্ছে ব্যাংকগুলো।
ব্যাংকিং খাতে নগদ টাকার সঙ্কট শুরু হয় গত বছরের শেষদিকে। ওই সময় দেশের ইতিহাসে কলমানি রেট (আন্তঃব্যাংক লেনদেন সুদের হার) সর্বোচ্চ ১৯০ শতাংশে পৌঁছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে কলরেট কমে এলেও সাম্প্রতিক কলমানি (আন্তঃব্যাংক) লেনদেন বেড়েছে ব্যাপক হারে। অপরদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহ করলেও তা বাজারের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। ফলে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, গত বছরের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে তরল সম্পদের পরিমাণ ছিল ৮৩ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা। এছাড়া ব্যাংকগুলোতে আমানত চাহিদা মেটানোর জন্য নিজস্ব ভল্ট ও সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে স্থিতি ছিল ৬ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে স্থিতি ছিল ২৭ হাজার ২১৭ কোটি টাকা। ন্যূনতম তরল সম্পদ সংরক্ষণের (এসএলআর) বাধ্যবাধকতা ছিল ৬০ হাজার ১৭২ কোটি টাকা। এর ফলে অতিরিক্ত তারল্য দাঁড়ায় ২৩ হাজার ৭২১ কোটি টাকায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বর্তমানে শেয়ারবাজারে মোট ৩২টি ব্যাংকের বিনিয়োগ আছে। এসব ব্যাংক শেয়ারবাজারে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। শেয়ারবাজারে দরপতনের ফলে ব্যাংকগুলোর বিশাল বিনিয়োগ আটকে যায়। দেখা দেয় নগদ অর্থের সঙ্কট। এতে পণ্য আমদানি বা ব্যাংক ঋণ প্রদানসহ ব্যাংকের নিয়মিত কার্যক্রমে দেখা দেয় স্থবিরতা।
ব্যাংকগুলোতে নগদ অর্থ সঙ্কটের পাশাপাশি দেখা দিয়েছে ডলার সঙ্কট। ব্যাংকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাহিদা অনুযায়ী ডলার বাজারে সরবরাহ করছে না। ফলে বাড়তি দামে ব্যাংকগুলো অপরাপর ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার কিনছে। এতে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।
ডলার সঙ্কটের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক একেবারেই চুপচাপ। তবে ব্যাংকাররা মনে করছেন ডলার পাচার হয়ে যাচ্ছে। এর ফলেই দর বাড়ছে ডলারের। যুক্তি তুলে ধরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমার দেশকে জানান, সারা বিশ্বে ডলারের অবস্থা ভালো নেই, ভালো আছে কেবল বাংলাদেশে। সর্বত্রই ডলারের দর কমছে, কেবল বাড়ছে বাংলাদেশে।
আগে যেখানে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই কোটি ডলারের লেনদেন হতো, এখন তা ৫০ লাখ ডলারে নেমে এসেছে। মূলত চাহিদার তুলনায় জোগান কম হওয়ায় বেড়েছে ডলারের দর। জানা গেছে, গত বছরের জুলাই মাসের তুলনায় ডিসেম্বরের শেষে ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান ১ দশমিক ৯৩ শতাংশ কমে গিয়েছিল। আর ডিসেম্বর মাসের তুলনায় জানুয়ারি মাসের শেষে ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতন হয়েছে প্রায় আড়াই শতাংশ। পরের মাসে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। আইএমএফ বলছে, ডলারের ঘোষিত দর ও বাজারদরের মধ্যে পার্থক্য হয়েছে সাড়ে ৩ শতাংশ, যা আইএমএফের সঙ্গে করা সমঝোতার বরখেলাপ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী গত বছর পহেলা ডিসেম্বর এক মার্কিন ডলারের বিপরীতে এক ইউরোর দর ছিল শূন্য দশমিক ৭৬৫৪। গতকাল এসে তা শূন্য দশমিক ৬৮৬৫ হয়েছে। অর্থাত্ এ সময় ডলারের মান কমে গেছে। আবার পহেলা ডিসেম্বর এক ডলারের বিপরীতে এক পাউন্ডের দর ছিল শূন্য দশমিক ৬৪৩০। গতকাল তা হয়েছে শূন্য দশমিক ৬১২৩। শুধু পাউন্ড এবং ইউরোর বিপরীতেই নয়, বিশ্বের প্রায় সব দেশের মুদ্রার বিপরীতেই ডলার ক্রমেই দুর্বল হয়ে আসছে। শুধু বিপরীত চিত্র বাংলাদেশে।
২০১০ সালের ৩০ জুন যেখানে গড়ে প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ছিল ৬৯ টাকা ৫০ পয়সা, সেখানে গতকাল এই বিনিময় হার হয়েছে ৭২ টাকা ৮২ পয়সা। অথচ ২০১০ সালের ৩১ ডিসেম্বর গড়ে এই বিনিময় হার ছিল ৭১ টাকা ১৫ পয়সা। অর্থাত্ তিন চার মাসের মধ্যেই ডলারের দর অনেকটা বেড়েছে। এর মানে হলো আগের চেয়ে বেশি দাম দিয়ে বা বাংলাদেশী টাকা দিয়ে ডলার কিনতে হচ্ছে।
অর্থনীতির সূত্র অনুযায়ী, স্থানীয় মুদ্রা তথা টাকা দুর্বল হলে রফতানিকারক ও প্রবাসী আয় প্রেরণকারীদের খুশি হওয়ার কথা। কেননা, সমপরিমাণ ডলারের বিনিময়ে আগের তুলনায় এখন তারা দেশে বেশি টাকা পাচ্ছেন। কিন্তু আমদানিকারকদের জন্য তা আবার সমস্যা। আগের চেয়ে বেশি টাকা ব্যয় করে তাদেরকে সমপরিমাণ ডলার কিনতে হচ্ছে। এতে তাদের আমদানি ব্যয় বাড়ছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান জানান, বর্তমানে ডলারের বাজারে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তার অন্যতম কারণ বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স আয় কমে যাওয়া এবং আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়া। তিনি আরও বলেন, দেশের অনেক মানুষই ডলার বৈধপথে না এনে অবৈধ পথে আনছে, যা ডলার সঙ্কটের একটি বড় কারণ।
এদিকে ডলার ও নগদ অর্থ সঙ্কটের কারণে পণ্য আমদানিতে ব্যাংকগুলো যে পরিমাণ এলসি খুলছে, তার অর্ধেকও নিষ্পত্তি করতে পারছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী গত বছর ১০ জুলাই থেকে চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে বিভিন্ন ব্যাংকে চাল আমদানির জন্য এলসি খোলা হয় ৭০৩ দশমিক ০৯ মিলিয়ন ডলারের। তবে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এলসির নিষ্পত্তি হয়েছে ৩০৮ দশমিক ০৪ মিলিয়ন ডলারের। এ সময়ে গম আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলা হয় ১১৭২ দশমিক ৩০ মিলিয়ন ডলারের। তবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গম আমদানিতে এলসির নিষ্পত্তি হয় মাত্র ৬২৫ দশমিক ৭৯ মিলিয়ন ডলারের।
Comments
Post a Comment